পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উদ্যোগে ১১ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে জাতীয় পর্যায়ে ইএমআইএস-এর সম্প্রসারণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ব্যবহারকারী হিসেবে বক্তব্য রেখেছিলেন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, পৈল ইউনিয়ন, হবিগঞ্জ সদর-এ কর্মরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নুরজাহান বেগম। তিনি শুরুতে উল্লেখ করেন: তিনি বিগত ২১ বছর যাবৎ হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার পৈল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্রে মা ও শিশু সেবা, কিশোর-কিশোরী সেবা, গর্ভবর্তী মায়ের সেবা, প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছেন। পাশাপাশি ইউনিয়নে অবস্থিত স্যাটেলাইট কেন্দ্রগুলোতেও তিনি সেবা দিয়ে থাকেন। যে কোন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে অনেকগুলো রেজিস্টার থাকে। কোন একজন মাকে সেবা দেয়ার জন্য প্রথমে চার বা ততোধিক রেজিস্টার পূরণ করতে হতো। প্রত্যেকটি খুঁজে খুঁজে সেবা গ্রহণকারীর নাম বের করতে হতো। পরে সেগুলোতে সেবার তথ্য পূরণ করতে হতো। পরবর্তীতে মামানি প্রকল্প থেকে মা ও নবজাতকের সেবা দেয়ার জন্য একটি রেজিস্টার দেয়া হয়, যেটিতে সেসব সকল সেবার তথ্য রাখা সম্ভব হয়। এভাবে চারটি রেজিস্টারে আলাদা আলাদা ভাবে লিখতে না হওয়ায় তাঁর ঝামেলা অনেক কমে যায়। ফলে আরো বেশি মায়ের সেবা দেয়া সম্ভব হয়। পরে উক্ত রেজিস্টারের ইলেক্টনিক ভার্সন তৈরি করে ট্যাবে দেয়া হয়। এতে তাঁর কাজ আরো সহজ হয়ে গেছে এবং বেশি বেশি মায়ের সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। স্যাটেলাইট কেন্দ্রগুলোতেও আর ভারী ভারী রেজিস্টার বয়ে নিয়ে যেতে হয় না, শুধু ট্যাব নিয়ে গেলেই চলে। ট্যাবেই সব সেবা লিপিবদ্ধ করা যায়। প্রশিক্ষণের পর থেকেই তিনি ট্যাব ব্যবহার শুরু করেছেন। তিনি ট্যাব পরিচালনার উপর চার দিনের নিবিড় প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, যার ফলে ট্যাবের মাধ্যমে সহজেই সেবা দিতে পারছেন।
তাঁর এলাকার প্রত্যেকের হেলথ আইডি কার্ড আছে। সেবা গ্রহণকারীকে শনাক্ত করার জন্য তা ব্যবহার করা যায়। কেউ পূর্বে কোন সেবা নিয়ে থাকলে তা সহজেই দেখা যায় এবং সেবাগ্রহণকারীর কোন জটিলতা আছে কিনা তাও সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানা যায়। কেউ হেলথ আইডি না নিয়ে আসলে, তাকে মোবাইল নম্বর দিয়েও খুঁজে বের করা যায়, তার পর প্রয়োজনীয় সেবা দেয়া যায়। হেলথ আইডি কার্ড না থাকলেও ময়িকভাবে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করে সেবা দেয়া হয়। এদের পরে সেবা দেয়ার সময় খুঁজে নেয়া যায়।
ট্যাবের পদ্ধতি অনুসরণ করে সেবা প্রদান করলে সিস্টেমই বলে উক্ত সেবা গ্রহণকারী ঝুঁকিপূর্ণ মা কি না এবং উক্ত মায়ের জন্য কী কী করণীয় হতে পারে। এটি তাঁর কাজের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। তাঁকে আর কষ্ট করে ঔষধের নাম লিখতে হয় না, শুধু ঔষধের নামে টাচ করলেই হয়। ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াও সেবা দেয়া যায় এবং ইন্টারনেট কানেকশন পাওয়ার সাথে সাথে ডাটা আপলোড হয়ে যায়।
এখন আর মাস শেষে কষ্ট করে সকল রেজিস্টার থেকে গুণে গুণে মাসিক রির্পোট তৈরি করতে হয় না, সিস্টেম অটো রির্পোট তৈরি করে দেয়। এই সিস্টেম ব্যবহার করে সেবা প্রদান করা এবং নির্ভুল রিপোর্ট তৈরি করা খুবই সহজ হয়ে গেছে।
Leave A Comment